চট্টগ্রামের আকবর শাহ থানায় করা নাশকতার মামলায় বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীকে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন নাকচ করেছে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তৃতীয় আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালত রিমান্ডের আবেদন নাকচ করেন। একই সময় আসামি পক্ষের আইনজীবীর করা জামিন আবেদনও নাকচ করেন আদালত।
এর আগে সোমবার সকালে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হোসেন মোহাম্মদ রেজার আদালতে আসামি আসলাম চৌধুরীকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেন। ওই দিন শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য্য করা হয়।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. মোরশেদ রহমান বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রিমান্ড আবেদনের শুনানির দিন ধার্য্য ছিল। আদালত মামলার তদন্ত কর্মকর্তার রিমান্ড আবেদন এবং আসামি পক্ষের আইনজীবীর জামিন আবেদন নাকচ করেন।’
২০১৬ সালের ১৫ মে ঢাকার খিলক্ষেত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির তৎকালীন আহ্বায়ক আসলাম চৌধুরী।
এরপর রাষ্ট্রদ্রোহের দুই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে নাশকতা, চেক প্রতারণাসহ বিভিন্ন মামলায় আসামি করা হয় আসলামকে। তবে সব কয়টি মামলায় জামিন পেয়েছেন বলে জানান তার আইনজীবী হাসিবুর রহমান।
এর আগে ভারত সফরে গিয়ে ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির সদস্য মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে তার হাসিমুখে কয়েকটি ছবি গণমাধ্যমে ফাঁস হয়। সে সময় বিষয়টি নিয়ে তুমুল আলোচনা হয়।
মেন্দি সাফাদি ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট বলে সে সময় লেখালেখি হয়েছিল।
আসলাম তখন বলেন, এই সফর রাজনৈতিক ছিল না, তার ব্যবসায়িক সফর ছিল।
বিএনপি তখন আসলামের পক্ষে দাঁড়ালেও সম্প্রতি দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আসলামের দায় বিএনপি নেবে না।
বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে একসেপ্ট ইসরায়েল তুলে দেয়ার সমালোচনা করে সম্প্রতি বিএনপির সংবাদ সম্মেলনে আসলামের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন ফখরুল। তখন তিনি আসলামের সেই বিষয়টিকে তার ব্যক্তিগত বলে উল্লেখ করেন।
আসলাম চৌধুরী ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে এবি ব্যাংকের চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ শাখা থেকে বিপুল অংকের ঋণ আত্মসাতের অভিযোগও আছে।
এই অভিযোগে ২০১৬ সালের জুলাই মাসে দুর্নীতি দমন কমিশন তার বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসলাম চৌধুরীর পারিবারিক মালিকানাধীন রাইজিং স্টিল লিমিটেড পুরোনো জাহাজ কেনার জন্য ২০১১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে তিনটি ঋণপত্রের (এলাসি) বিপরীতে এবি ব্যাংক চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ শাখা থেকে ৩২৫ কোটি ৭৬ লাখ ৩০ হাজার ৯৫৫ টাকা ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করেননি।
গত ৩০ মে আসলাম চৌধুরীকে হাইকোর্ট জামিন দেয়ার পর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে সেই আদেশ স্থগিত হয়েছে।
তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর দিন ২০ জুন পর্যন্ত তার জামিন স্থগিত করে এ সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিল করতে বলেছে আপিল বিভাগ।